আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজ আমরা ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি সবারই উপকারে আসবে। তো চলুন শুরু করা যাক মূল আলোচনায়।
ওয়েব ডিজাইন হচ্ছে একটা ওয়েবসাইটের জন্য বাহ্যিক অবয়ব তৈরী করা। ওয়েব ডিজাইনারের মুল কাজ একটা সাইটের জন্য টেমপ্লেট বানানো, এখানে কোন এপ্লিকেশন থাকবেনা।যেমন লগিন সিস্টেম, নিউজলেটার সাইনআপ, পেজিনেশন, ফাইল আপলোড করে ডেটাবেসে সেভ করা, ইমেজ ম্যানিপুলেশন, যদি সাইটে বিজ্ঞাপন থাকে তাহলে প্রতিবার পেজ লোড হওয়ার সময় বিজ্ঞাপনের পরিবর্তন এগুলি এপ্লিকেশন, ওয়েব এপ্লিকেশন।এসব তৈরী করতে হয় প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ দিয়ে। কোন প্রকার এপ্লিকেশন ছাড়া একটা সাইট তৈরী করা এটাই ওয়েব ডিজাইন, এধরনের ডিজাইনকে বলতে পারেন স্টাটিক ডিজাইন।ওয়েব ডিজাইনের জন্য এই ধারনাটি সাধারনত ব্যবহৃত হচ্ছে।
এইচটিএমএল : এটা একটা মার্ক আপ ল্যাংগুয়েজ, প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ নয়, শেখা খুব সহজ।
সিএসএস : এটাও মার্ক আপ ল্যাংগুয়েজ
ফটোশপ : এখানে যে মুল কাজটি শিখতে হবে তাহল পিএসডি থেকে এইচটিএমএল টেমপ্লেট (PSD to HTML) বানানো এছাড়া ব্যানার, বাটন, এনিমেশন তৈরী করা এসব জানতে হবে। অতিরিক্ত হিসেবে ফ্ল্যাশ দিয়ে এনিমেশন তৈরী করা শিখতে পারেন।
বিভিন্ন ওয়েব সাইটের টিউটোরিয়াল থেকে ওয়েব ডিজাইন ভালভাবে শিখতে পারবেন। বাংলা ইংরেজি অনেক সাইট আছে এসব শেখার। আপনি ইউটিউবেও সার্চ দিলে অনেক পরিমাণ ভিডিও পাবেন এ বিষয়ের উপর। ওয়েব ডিজাইন শেখা বেশ সহজ, কয়েকমাসেই শেখা সম্ভব।ভালভাবে শিখতে পারলে ওয়েব ডিজাইনের উপর প্রচুর চাকরি এবং ফ্রিল্যান্সিং এ হাজার হাজার কাজ পাওয়া যায়।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ওয়েবসাইটের জন্য এপ্লিকেশন তৈরী করা।উপরে যে এপ্লিকেশনগুলির উল্লেখ করেছি এধরনের আরো হাজারো এপ্লিকেশন আছে, ওয়েব ডেভেলপারকে এসব এপ্লিকেশন তৈরী করতে হবে। যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন তাহলে ক্লাইন্টের চাহিদা অনুযায়ী এমনও এপ্লিকেশন তৈরী করা লাগতে পারে যার অস্তিত্ব পৃথিবীতে নেই। এই বিষয়টি বেশি চ্যালেঞ্জিং এবং ডাইনামিক।অর্থ্যাৎ আপনাকে এপ্লিকেশন ডিজাইন করতে হবে। তাই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কে আরও সুনির্দিষ্ট করে বলা যায় ওয়েব এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট।
এইচটিএমএল, সিএসএস এগুলো তো স্বভাবতই জানা থাকতে হবে। এরপর নিচেরগুলি..
এটাকে ব্রাউজার স্ক্রিপ্টিং ও বলা হয় অর্থ্যাৎ এই ল্যাংগুয়েজ দিয়ে লেখা কোড শুধু কোন ব্রাউজারে (যেমন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, মজিলা ফায়ারফক্স, অপেরা, গুগল ক্রোম ইত্যাদি) কাজ করবে। জাভাস্ক্রিপ্টের ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে দ্রুত কাজ করা যায়। এরুপ একটি ফ্রেমওয়ার্ক জেকোয়েরি টিউটোরিয়াল।
এটাকে সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং বলা হয় কারন এই ল্যাংগুয়েজ দিয়ে লেখা কোডগুলি শুধু সার্ভারে এক্সিকিউট হয়। ডেটাবেস : পিএইচপি দিয়ে কিভাবে ডেটাবেস সংযোগ করতে হয়, এসকিউয়েল দিয়ে ডেটাবেস বানানো অর্থ্যাৎ ডেটাবেস ডিজাইন জানতে হবে কারন এখন যেকোন ডাইনামিক সাইটের ডেটাবেস আছে অথবা বলতে পারেন ডেটাবেস থাকতেই হয়।
(আরও আছে যেমন কেক পিএইচপি, জেন্ড ফ্রেমওয়ার্ক, সিমফনি, ওয়াই আইআই, কোহানা ইত্যাদি একটা শিখলেই চলবে)। কোন ফ্রেমওয়ার্ক ছাড়াও ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরী করতে পারবেন তবে এতে বেশি সময় লাগবে এবং বেশি কোড লিখতে হবে।
API, ছোটখাট ডেটা স্টোরিং ইত্যাদির জন্য এক্সএমএল লাগে।
বাংলা ইংরেজি অনেক সাইট আছে এসবের টিউটোরিয়াল থেকে শিখতে পারবেন। এছাড়া Wrox বা Apress পাবলিকেশনের অনেক ভাল ভাল বই আছে সেগুলির সাহায্য নিতে হবে। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার সবচেয়ে কার্যকরী কৌশলটি হল "বসে যান এবং একটা প্রজেক্ট তৈরী করুন" হতে পারে একটা ফোরাম, ব্লগ, ইউজার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা এই ধরনের কোন প্রজেক্ট। raw PHP দিয়ে করুন। এরপর সিএমএস বা ফ্রেমওয়ার্ক ডেভেলপমেন্টে যান।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে গেলে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন, শেখাটাও একটু কঠিন এবং প্রচুর ধৈর্য্য সহকারে কাজ শিখে যেতে হবে এবং তার পাশাপাশি অবশ্যই আগ্রহ থাকতে হবে। চাকরির ক্ষেত্রে বা ফ্রিল্যান্সিং-এ ওয়েব ডেভেলপারের চাহিদা অনেক এবং মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রচুর পরিমাণ কাজ রয়েছে।
আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে আবার কোন বিষয় নিয়ে হাজির হবো। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
আর কোন প্রশ্ন বা কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন। উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।
Login to comment Login
You're not logged-in.